ভাষা আন্দোলন ও আমার উপলব্ধি
ভাষা আন্দোলন ও আমার উপলব্ধি

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা।
ভাষা আন্দোলন ও আমার উপলব্ধি নিয়ে আজকের দিনে আইটেকবাংলায় বিশেষ একটি লেখা।
বর্তমানে ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস নিয়ে একেকজন একেকরকম প্রশ্ন তুলে। অথচ বিগত কয়েকবছর আগেও এসব হতে দেখি নি।
এর কারন খুঁজতে গিয়ে যেটা বুঝলাম তা হলো আমাদের বুদ্ধিজীবীরা একটা জাতীয় গৌরবকে অযথা চিপতে চিপতে পুরো তেঁতো বানিয়ে ফেলেছে। এখন অবস্থাটা এমন হয়েছে একদল হিন্দি গান বাজায় আরেকদল উর্দু নিয়া মাতম করে।
দুই দলের ভাষা প্রেমের নমুনা ফুটে উঠে এদিন। ২ কলম হিন্দি না লিখতে পারা পাবলিকও এদিন হিন্দি গান বাজায়। আর জীবনে উর্দু না জানা পাবলিকও আহা আবার যদি উর্দু হতো! হাস্যকর।
ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে ভাষার কোনো সীমারেখা নেই। বাংলা আমার জন্মগত ভাষা এটা আমার ডিফল্ট সেটিংস।।আমি যতদিন এ নশ্বর পৃথিবীর বুকে আছি ততদিন আমার কাছে এটাই থাকবে।
এর বাইরে আমি আমার খেয়ালখুশি মতো ভাষা জানবো শিখবো, চর্চা করবো। এটা আমার অধিকার। এখানে কারো হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। কিন্তু আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা জিনিসটাকে এমন করেছে যে এখন এটা মানুষকে দ্বিধাবিভক্ত করে ফেলেছে। মানুষ নানা কথা বলছে
এটা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য হতাশার ও দুঃখজনক। আমরা এখন এমন একটা জাতি হয়েছি যাদের প্রতিটা জাতীয় বিষয় নিয়ে দ্বিধা বিভক্তি শুরু হয়!
ভাষা আন্দোলনে কিন্তু কোনো বুদ্ধিজীবী এগিয়ে আসে নাই। আদতে তারা বাতেলা ছাড়া আর কিছু করতে পারে না। আমাদের অনেক প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিবর্গ ভাষা আন্দোলনে ছিলেন ও অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছে। যদিও এখন তাদের অনেক কেই আমরা স্মরণ করি না।
বুদ্ধিজীবীরা প্রতিটা জাতির জন্য অকল্যান ছাড়া আর কিছু বয়ে আনে না। এরা অধিকাংশ সময়েই চাটুকারিতায় অগ্রগণ্য থাকে। পদলেহনে নিযুক্ত থাকে। এদের দ্বারা ভালো কিছু আশা করা যায় না। এদের কারনেই আজ বাংলা হুমকির মুখে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আমার জন্য গর্বের। ‘৫২ সালে প্রতিবাদের মাঠে বাতেলা করা নেতৃবৃন্দ এগিয়ে যায় নাই। আমাদের দেশের আপামর জনতাই এগিয়ে এসেছিল। তাই আমার কাছে এসব আপামর জনগনের দাবিই বিবেচ্য। অন্তত এসব জাতীয় বিষয় নিয়ে বিভক্তি না ছড়াই।
হ্যা অনেক তর্ক বিতর্ক, পিছনের কথা থাকবে। প্রেক্ষাপট নিয়ে কথা থাকতেই পারে, নানা প্রশ্ন উঠতেই পারে। কিন্তু ভাষা আন্দোলন তো মিথ্যা নয়। বুদ্ধিজীবীদের বাতেলা বিবেচ্য না করে এটাকে একটা জাতীয় বিষয় ধরে নিয়ে নিজেদের মতো পালন করাই শ্রেয়।
নানান মুনির নানান মত আর বিশৃঙ্খলার কারণে আজ আমরা এত পিছিয়ে। চিন্তা করেন তো বাংলা ভাষা কত পিছিয়ে। আমরা জাতি হিসেবে কত পিছিয়ে সেটা কি একটু ভেবে দেখেছি!
আমাদের এত বিভক্তি ই আমাদের পতনের মূল। আমাদের প্রাতঃস্মরণীয় অনেক ব্যক্তিবর্গ ও এসব জাতীয় বিষয় নিয়ে ঐক্যমতে থেকেছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা আজ ঐক্য প্রদশর্ন করতে পারছি না।
আগেই বলেছি কোনো একটা বিষয় নিয়ে নানান প্রশ্ন থাকতে পারে। সেটা বিশ্লেষণ করা হবে, গবেষনা করা হবে, তথ্যভিত্তিক আলোচনা হবে।
কিন্তু তাই বলে ভাষা আন্দোলন তো মিথ্যা হয়ে যাবে না। ৫৬% এর উপর কিছু চাপিয়ে দেয়া এতই সোজা। এটা পাকিস্তানের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও অদূরদর্শীতার অভাবের নিদর্শন ছিলো। এখানে ভাষা আন্দোলনকে বলির পাঠা বানানোর কোনো কারণ দেখি না।
পৃথিবীর সকল ভাষা আমার ভাষা। প্রতিটা ভাষা স্বাধীন ভাবে চর্চা হোক এটাই কাম্য৷ দিনশেষে ভাষার অধিকার হোক উন্মুক্ত। একাধিক রাষ্ট্রভাষা চালু হোক। তবু যেন চাপিয়ে দেয়া নাহয় কোনো ভাষা।
আরো পড়ুন ২ জানুয়ারির গ্রানাডা
– আইটেক বাংলার ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করতেঃ এখানে ক্লিক করুন।
– আইটেক বাংলার ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকতে এই পেজ ভিজিট করুন।
– আইটেক বাংলার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
– গুগল নিউজে আইটেক বাংলার সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন
– আইটেক বাংলার সাইটে লিখতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
– প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে নিয়মিত ভিজিট করুন www.itechbangla.com সাইট।