বাংলা সন প্রবর্তন কিভাবে হলো
বাংলা সন প্রবর্তন কিভাবে হলো

শুভ নববর্ষ। হিমশীতল রাত পোহালেই খরতাপ ভরা আবহাওয়ায় এবারের বাংলা নববর্ষ শুরু হবে। নতুন বছর শুরু হবে নতুন আশায় আমরা বুক ভরাবো আস্তে আস্তে মলিন হবে সে স্বপ্ন। এভাবেই আমরা এগিয়ে যাব আগামির পানে।
শেষ আর শুরুর এই সন্ধিক্ষণে আজ ইতিহাসের আলোকে বাংলা সন প্রবর্তন নিয়ে ছোট্ট একটি প্রামাণ্য লেখা।
বাংলা সন প্রবর্তন ও বিতর্ক
বাংলা সনের প্রবর্তন নিয়ে ৪ টি মত পাওয়া যায়। এর মধ্যে স্রং সন আর সুলতান হোসেন শাহকে বাংলা সন প্রবর্তনের সঙ্গে জড়ানোর পক্ষে কোনো প্রামাণ্য দলিল অবশ্য কেউই এখন পর্যন্ত উপস্থাপন করতে পারেননি। তাদের দাবি, লোকমুখে প্রচলতি নানা সূত্র ও অনেকটা অনুমানভিত্তিক।
বাকি থাকেন শশাঙ্ক ও আকবর। আর সেটা নিয়েই আজকের আলোচনা।
বাংলা সন ও সম্রাট আকবর
মূলত সন গণনা নানা নামে বহু আগে থেকেই চলে আসছে। শকাব্দ, লক্ষনাব্দ, পালাব্দ, চৈতন্যাব্দ ইত্যাদি নামে প্রচলিত সনগণনা সেটারই প্রামান্যতা বহন করে। এছাড়াও সে সময়ে যখন যে রাজার শাসনামল থাকতো তাঁর নামে সন প্রচলিত হত। তবে এসব সনের কোনো সার্বজনীন ব্যপকতা ছিলো না।
৮৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দ এর সময় থেকে প্রচলিত ছিলো শকাব্দ। এর মাঝে আবার বহু সন প্রচলিত ছিলো।
এরপর যখন মুসলিম শাসন শুরু হয় তখন আসে হিজরি সনের কথা। হিজরি সনের প্রচলন এখানে প্রশাসনিক ভাবে আরম্ভ হয় ১২০১ খ্রিষ্টাব্দে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজীর বঙ্গ জয়ের পর। তখন তৎকালীন প্রচলিত শকাব্দ ও লক্ষনাব্দ সনের পাশাপাশি শাসনতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডে হিজরী সনের প্রচলন শুরু হয়। এবং আস্তে আস্তে এটি জনসাধারণের মাঝে ও ছড়িয়ে পড়ে। প্রাত্যহিক জীবনে হিজরি সনের ব্যাপক প্রচলন শুরু হয়। এখানে একটা লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো সন শব্দটি আরবি শব্দ হতে উদ্ভূত, অর্থ বর্ষ। আর সাল কথাটা ফার্সি শব্দ হতে।
যেভাবে এল বাংলা সন
হিজরি , শকাব্দ আকবরের শাসনামল পর্যন্ত চালু থাকলেও হিজরি সনের একটি অসুবিধা ছিলো। যার ফলে ফসল কাটার সময় খুব অসুবিধার সম্মুখীন হতে হতো, কারণ আগের বছর যে তারিখে ফসল কাটতো, পরের বছর সে তারিখ ১১ দিন এগিয়ে যেতো। ফলে দেখা যেত খাজনা আদায়ের সময়ে কৃষকের ফসল কাটার সময়ই আসে নি। অথবা তা পার হয়ে গিয়েছে ২-৩ মাস আগেই! কারন কৃষকের ফসল তো আসে মৌসুম দেখে, যার নির্ভরশীলতা সূর্য্যের উপর।
এর ফলে আকবর বিভিন্ন রাজ্য হতে খাজনা আদায়ের লক্ষ্যে সৌরসংবত একটি সার্বজনীন সন গণনার প্রয়োজন বোধ করেন। এরপর তিনি এ বিষয়ে আলাপ করলেন তার সভাসদ আবুল ফজলের সঙ্গে। আবুল ফজলের পরামর্শে (কেউ কেউ মনে করেন, সম্রাট আকবরকে দিনপঞ্জি প্রণয়নের এই পরিকল্পনা দিয়েছিলেন তার মন্ত্রী টোডর মল) সম্রাট কঠিন এই কাজটি সম্পাদনের দায়িত্ব দিলেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিদ আমির ফতেহউল্লাহ শিরাজীর ওপর। আমির শিরাজী বিষয়টি নিয়ে অনেক গবেষণা করলেন। তারপর হিজরি সালকে অক্ষুন্ন ও অপরিবর্তিত রেখে উদ্ভাবন করলেন সৌরসংবত বাংলা সনের। ফলে দূর হল খাজনা আদায়ের জটিলতা।
তারিখ ই ইলাহী
আকবর যখন সিংহাসনে বসেন তখন হিজরি ৯৬৩ সাল, ইংরেজির হিসাবে ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দ। আর এ সময়কেই প্রামাণ্য ধরে বাংলা ৯৬৩ সন শুরু করা হয়। বাংলা সন যখন হিসেব শুরু হয় তখন সিংহাসনে আকবরের ২৮বছর শেষ হয়ে ২৯তম বছর চলছে। তাই খুব সম্ভব বাংলা প্রথম সনটা হল ইংরেজি ১৫৮৪ ও ৯৬৩+২৮ = ৯৯১ বঙ্গাব্দ!
তবে শুরুতে এর নাম ছিলো তারিখ ই ইলাহী। আকবর ৯৯১ বঙ্গাব্দ ও ইংরেজি ১৫৮৪ সালে এ তারিখ ই ইলাহী প্রচলন করেন। এটি ছিলো আকবরের সমগ্র রাজ্যের প্রামান্য সন গণনা। আর এর উপর নির্ভর করেই বিভিন্ন রাজ্যে স্থানীয় সন প্রচলিত হয়েছিল। যেমন বাংলা ও উড়িষ্যার আমলি ও বিলায়েতি সন বাংলা, বিহার, দক্ষিন্যাত্য ও তৎকালীন বোম্বের বিভিন্ন ফসলি সন। তেমনই একটি হল বঙ্গাব্দ। কালের আবর্তনে তারিখ ই ইলাহী বিলুপ্ত হয়ে গেলেও তাঁর স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে বাংলায় এখনো বিরাজ করছে বঙ্গাব্দ।
এ সম্পর্কে আইন ই আকবরী গ্রন্থে তারিখ ই ইলাহীর জন্ম সন্মন্ধ্যে বিশদ বর্ননা দেয়া আছে
আকবর বেশ কিছু দিন ধরে হিন্দুস্তানের বিভিন্ন স্থানের দিন গননা সমস্যাকে সহজ করে তোলার জন্য একটি নতুন মাস ও বছর গননা পদ্ধতি প্রবর্তন করার ইচ্ছা প্রকাশ করে আসছিলেন। তিনি হিজরী প্রথা ব্যাবহারের বিরোধী ছিলেন।…. আমীর ফতে উল্লাহ শিরাজীর প্রচেষ্টায় এই নতুন অব্দের প্রচলন হলো। এই অব্দের দিন ও মাস গুলো অধিবর্ষহীন। মাসের দিনের সংখ্যা ২৯ ও ৩২। ইলাহী অব্দের মাস গুলো ফারওয়ারদীন, আর্দিবিহিশত, খুরদাদ, তীর, মুরদাদ, শাহরীয়ার, মিহির, আবান, আজার, দে, বাহমান ও ইসপন্দর।
আইন ই আকবরী
তারিখ ই ইলাহী থেকে বঙ্গাব্দ
প্রথমদিকে তারিখ-ই-ইলাহির মাসগুলো ছিল যথাক্রমে ফারওয়ারদীন, আর্দিবিহিশত, খুরদাদ, তীর, মুরদাদ, শাহরীয়ার, মিহির, আবান, আজার, দে, বাহমান ও ইসপন্দর। পরবর্তী তে বঙ্গাব্দ তে এ মাসের নামগুলো বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ ইত্যাদিতে বিবর্তিত হয়। এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে এ নামগুলো নেয়া হয়েছে ৭৮ খ্রিস্টাব্দে সাকা জাতির রাজত্বের সময় প্রচলিত শকাব্দ থেকে: ১. বিশাখা থেকে বৈশাখ। ২. জাইষ্ঠা থেকে জ্যৈষ্ঠ। ৩. আষাঢ়া থেকে আষাঢ়। ৪. শ্রাবণা থেকে শ্রাবণ। ৫. ভাদ্রপাদা থেকে ভাদ্র। ৬. আশ্বিনী থেকে আশ্বিন। ৭. কৃতিকা থেকে কার্তিক। ৮. পূস্যা থেকে পৌষ। ৯. আগ্রৈহনী থেকে অগ্রহায়ণ। ১০. মাঘা থেকে মাঘ। ১১. ফাল্গুণী থেকে ফালগুণ। ১২. চিত্রা থেকে চৈত্র।
গবেষকদের বিচারে আকবরই বঙ্গাব্দের প্রবর্তক
গ্রণ্থসূত্র বিবেচনায় আবুল ফজলের ’আই্ন-ই-আকবরি’-তে উল্লেখ থাকায় মোঘল সম্রাট আকবরকেই বাংলা সন বা বঙ্গাব্দ প্রবর্তনের মর্যাদা দিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনসহ সিংহভাগ গবেষক।
“সম্রাট আকবর প্রজাদের চাষাবাদে চন্দ্রবছর হিজরি সন অনুসরণের অসুবিধার বিষয়ে অবগত হয়েছেন। তিনি হিজরি অব্দ ব্যবহারের বিরোধী। আকবর বহুদিন ধরে হিন্দুস্থানের বিভিন্ন অঞ্চলে (দিন গণনার) সমস্যাকে সহজ করে দেওয়ার জন্য এক নতুন বছর ও মাস গণনাক্রম প্রবর্তন করতে আগ্রহী। এর নাম হলো ’ইলাহি সন’।”
’আই্ন-ই-আকবরি’ গ্রন্থে বলা হয়েছে
বিখ্যাত বিজ্ঞানী ডঃ মেঘনাদ সাহা শ্রদ্ধার সাথে তাকে স্বরন করেনঃ
The mughal emperors appaear to have strongly felt the necessity of a reformed solar calendar and a central observatory, The great Akbar introduce The Jelali calendar of Iran which is one of the best solar calendar
Collected works of Meghnad Saha Vol.3 page 59, Ed. Santimoney Chatterjee, Saha institute of nuclear Physics, Orient Longman, 1992
“১৯৫৪ সালে ভারতীয় পঞ্জিকা সংস্কার কমিটির প্রধান ডঃ মেঘনাদ সাহা অঙ্ক কষে নিশ্চিত ঘোষণা করেছিলেন যে সম্রাট আকবরই বাংলা সনের প্রবর্তক। পরে উড়িষ্যার ইতিহাসবিদ কাশীপ্রসাদ জয়সোবাল এ মতকে সমর্থন করেছিলেন।
“আমিও মনে করি, ইতিহাসের অভিমত হলো সম্রাট আকবরই ফসলী সন হিসেবে বাংলা সন চালু করেছিলেন”
উড়িষ্যার ইতিহাসবিদ কাশীপ্রসাদ জয়সোবাল
হিজরী সনকে সৌর বছরে পরিণত করে বাংলা সন চালু করা হয়েছিলো, এবং সম্রাট আকবর যা চেয়েছিলেন তা হলো রাজস্ব প্রশাসনের সংকট দূর করা।
অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন
বাংলা সন ও শশাঙ্ক
আর শশাঙ্ক সম্পর্কে যেটা বলা হয় সেটা অনেকটা অনুমান ভিত্তিক। একদম সঠিক প্রামাণ্য দলিল কেউ ই উপস্থাপন করতে পারেন নি এখন পর্যন্ত। তাছাড়া শশাঙ্ক যে বাংলা সনের প্রবর্তক সেটা এতদিন কেউ দাবি না করলেও সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে একটি বিশেষ দল ক্ষমতা গ্রহনের পর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) থেকে মূলত এই দাবি উঠে।
সুনীলকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও ‘বঙ্গাব্দের উৎসকথা’
শশাঙ্ক যে বাংলা সন বা বঙ্গাব্দের প্রচলন করেন সেটা নিয়ে সুনীলকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘বঙ্গাব্দের উৎসকথা’ বইয়ের ৩৯ পৃষ্ঠায় লিখেছেন
৫৯৪ খ্রিস্টাব্দের ১২ই এপ্রিল গৌড়ের সিংহাসনে বসেন শশাঙ্ক, আর সেদিন থেকেই বাংলা সন বা বঙ্গাব্দের প্রচলন হয়।
‘বঙ্গাব্দের উৎসকথা’, ৩৯ পৃষ্ঠা
তবে যারা সুনীলকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এর লেখাটির উপরোক্ত অংশকে রেফারেন্স হিসেবে চালিয়ে দেয়ার প্র্যাস চালান। তারা সুকৌশলে পুরো লেখাটা তুলে ধরা থেকে বিরত থাকেন। সুনীলকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এর পুরো লেখাটা পড়লেই আমরা পরিষ্কার বুঝতে পারবো যে কি শুভঙ্করের ফাঁকি এখানে বিদ্যমান রয়েছে। আমি নিচে ছবি ও লেখা হুবহু তুলে দিচ্ছি।

‘বঙ্গাব্দের উৎসকথা’, সুনীলকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ৩৯ পৃষ্ঠা এর হুবহু লেখা
বঙ্গাব্দ : প্রবর্তক ও প্রবর্তনকাল
পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের পঞ্জিকাকারগণ ১৪০০ বঙ্গাব্দ বছরটিকে অধিবর্ষরূপে চিহ্নিত করেছেন। পূর্বে বর্ণিত বঙ্গাব্দের অধিবর্ষ গণনার সূত্রানুসারে এ বছরটি অধিবর্ষ। ১৪০০ বঙ্গাব্দের ৩১ চৈত্র (১৪ এপ্রিল ১৯৯৪) বৃহস্পতিবার দিনটি সরকারী ও বেসরকারী মতে বঙ্গাব্দের চতুর্দশ শতাব্দীর শেষ দিন বলেও স্বীকৃত। তাই উপর্যুক্ত দিন থেকে বঙ্গাব্দের অধিবর্ষ গণনার নিয়ম মেনে ইংরাজ আমল, মুসলমান আমল, (মধ্যযুগ), সেনযুগ, পালযুগ, মাৎস্যন্যায়ের যুগ, হর্ষবর্ধন ও ভাস্কর বর্মার রাজ্যাভিষেককাল পেরিয়ে আমরা অনায়াসে পৌঁছে যেতে পারি সৌর প্রভাবযুক্ত বঙ্গদেশের[১১১] গৌড়বঙ্গে—১৪০০ সৌর বছর আগে—১ বঙ্গাব্দের ১ বৈশাখ (১২ এপ্রিল ৫৯৪) সোমবার সূর্যোদয় কালে—বঙ্গাব্দের আদিবিন্দুতে [১১২- ১১৪]। ঐ সময়ে বৃহত্তর বঙ্গদেশে মহারাজ শশাঙ্ক ছাড়া আর কোন খ্যাতনামা শাসক, ধর্মপ্রচারক বা মহাপুরুষের সন্ধান মেলে না যিনি বঙ্গাব্দ প্রবর্তন করতে পারেন। বঙ্গাব্দের সূচনা সোমবারে।
শৈবধর্মাবলম্বী হিসাবে সোমবার দিনটি শশাঙ্কের নিকট বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গাব্দের বর্ষারম্ভ বৈশাখে। গুপ্তযুগে বৈশাখ থেকে বর্ষ গণনার প্রথম যে শুরু [১১৫] তারই অব্যাহত ধারা বঙ্গ াব্দের ক্ষেত্রে প্রবহমান। গুপ্ত প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে ঐ যুগের আদর্শ ও কৃষ্টিতে বিশ্বাসী শশাঙ্ক যে বৈশাখ মাসকে বছরের প্রথম মাস হিসাবে ধার্য করবেন তাতে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের কোন অবকাশ নেই। আবার গুপ্তবংশীয় রাজা মহাসেনগুপ্ত-র শাসনের অন্তিম লগ্নে ৫৯৪ খ্রীষ্টাব্দের ঐ নির্দিষ্ট দিনে গুপ্ত অধীনতামুক্ত হয়ে গৌড় বঙ্গে স্বাধীন রাজত্বের সূচনা করা শশাঙ্কের পক্ষে সর্বতোভাবেই সম্ভব।
তাই শশাঙ্কের স্বাধীন রাজত্বের সূচনা ও বঙ্গাব্দের গণনা শুরু একই দিনে হয়েছে—বলা যায়। অতএব আপাতত প্রত্যক্ষ প্রমাণ না থাকলেও আনুষঙ্গিক প্রমাণে প্রমাণিত যে, শশাঙ্কের আমলেই বঙ্গাব্দের সূচনা । কিন্তু অনেকেরই প্রশ্ন, শশাঙ্কের আমলে যদি বঙ্গাব্দের সূচনা হয় এবং তিনিই যদি এর স্রষ্টা হন, তাহলে প্রথম হাজার বছর পর্যন্ত ঐ অব্দের প্রচলন সং ক্রান্ত নিদর্শনের অভাব কেন? বঙ্গদেশের প্রাচীন মন্দিরগাত্রে, বঙ্গদেশের পুরানো পুথিপত্রে বঙ্গাব্দের উল্লেখ মেলা কষ্টকর কেন?
‘বঙ্গাব্দের উৎসকথা’, সুনীলকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ৩৯ পৃষ্ঠা
সমসাময়িক গ্রন্থে ‘ঘোরতর বৌদ্ধধর্ম-বিদ্বেষী’ বলে বর্ণিত ও মরণোত্তর কালে যিনি ‘কুষ্ঠব্যাধির শিকার’ আখ্যায় ভূষিত সেই আপনভোলা, শৈবধর্মাবলম্বী
ঐ সময়ে বৃহত্তর বঙ্গদেশে মহারাজ শশাঙ্ক ছাড়া আর কোন খ্যাতনামা শাসক, ধর্মপ্রচারক বা মহাপুরুষের সন্ধান মেলে না যিনি বঙ্গাব্দ প্রবর্তন করতে পারেন। বঙ্গাব্দের সূচনা সোমবারে। শৈবধর্মাবলম্বী হিসাবে সোমবার দিনটি শশাঙ্কের নিকট বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
‘বঙ্গাব্দের উৎসকথা’ বইয়ের একটি যুক্তি
উপরোক্ত যুক্তিটি কোনোভাবেই কোনোরূপ প্রামাণ্য দলিল হতে পারে না। লেখক এখানে পুরোপুরি অনুমানের বশবর্তী হয়ে শশাঙ্ককে বঙ্গাব্দের প্রবর্তক বানাতে চাইছেন।
শশাঙ্কের শাসনকাল বিতর্ক
এখানে একটি মূল সমস্যা হলো শশাঙ্ক এর শাসনকাল নিয়ে। তাঁর শাসনকাল নিয়ে কোনো প্রামাণ্য দলিল নেল বা নিদর্শন নেই । ঐতিহাসিকেরা তাঁর যে শাসনকালের সময়গুলো উল্লেখ করেন, তাঁর অনেকটাই নিছক অনুমানের উপর নির্ভর করে ধারণা করা। যেমন উইকিপিডিয়ার মতে, “খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে তিনি রাজত্ব করেছেন বলে ধারণা করা হয়। ঐতিহাসিকদের মতে তিনি ৫৯৩ থেকে ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে রাজত্ব করেন।“
আবার বাংলাপিডিয়ার মতে, “শশাঙ্ক ৬০০ থেকে ৬২৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে রাজত্ব করেন বলে ধারণা করা হয়।”
এটা শুধু নমুনা মাত্র। বিভিন্ন বইয়ে বিভিন্নভাবে লেখকরা তাঁর শাসনের সময়কাল কল্পনা করেছেন কিন্তু কোনো প্রামাণ্য দলিল বা তত্ত্ব উপস্থাপন করতে পারেন নি। এইতো যেমন সুনীলকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘বঙ্গাব্দের উৎসকথা’ বইয়েও কোনো বিশ্বাসযোগ্য দলিল উপস্থাপন করতে পারেন নি। এক্ষত্রে তিনি “পারেন”, “বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ”, “বলা যায়” ইত্যাদি কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করেছেন। এ ব্যপারে সব লেখকের ই মূলত এ দশা। সঠিক করে কেউ ই এ বিষয়টি নিয়ে বলতে পারেন নি।
শশাঙ্ক ও ‘গুপ্তাব্দ’
এখানে একটা লক্ষ্যনীয় বিষয় এই যে শশাঙ্ক যে সময়ে তাঁর শাসনকাল শুরু করেন সে সময়ে গুপ্তবংশীয় রাজবংশ বিদ্যমান ছিলো। যদিও তারা তখন শেষের দিকে ছিলেন। কিন্তু সেই সময়কার কিছু প্রামাণ্য পুঁথিতে আবার ‘গুপ্তাব্দ’ শব্দটার উল্লেখ পাওয়া যায়।
আবার শশাঙ্ক সম্পর্কে এমন কথাও অনেক ঐতিহাসিক বলেছেন যে শশাঙ্ক প্রথম জীবনে স্বাধীন রাজা ছিলেন না, গুপ্ত বংশীয় মহাসেন নামক এক রাজার সামন্ত ছিলেন তিনি। তবে ষষ্ঠ শতকের শেষের দিকে গৌড়ের পরবর্তী গুপ্তবংশীয় রাজাগণ দুর্বল হয়ে পড়েন।
লেখক তাঁর এই লেখার একটি অংশে শশাঙ্ক কে জাস্টিফাই করার জন্য বলেছেন
আপাতত প্রত্যক্ষ প্রমাণ না থাকলেও আনুষঙ্গিক প্রমাণে প্রমাণিত যে, শশাঙ্কের আমলেই বঙ্গাব্দের সূচনা।
এটা অনেকটা এমন হয়ে গেল যে, “বিচার মানি, কিন্তু তালগাছ আমার।” যেখানে আকবরের পক্ষে সুস্পস্ট প্রমাণ ও অধিকাংশ ঐতিহাসিক সেটাকে সমর্থন করেছেন সেখানে এভাবে একটা প্রমাণহীন বিষয়কে চাপিয়ে দেয়া সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
শশাঙ্ক সমীপে একটি প্রশ্ন ও উত্তর
এখন প্রশ্ন হলো শশাঙ্কই যদি বঙ্গাব্দের প্রবর্তক হন তাহলে প্রথম হাজার বছর পর্যন্ত ঐ অব্দের কোনো প্রচলন সংক্রান্ত নিদর্শনের এত অভাব কেন?
এ ব্যাপারে সুনীলকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন কালের বিবর্তনে ও পাল, সেন নানাবিধ শাসনের কারনে নাকি শশাঙ্কের এ বঙ্গাব্দের প্রচলন ঢাকা পড়ে গিয়েছে। কথাটা একটু অবাস্তব বা অবিশ্বাস্য। কারন এরও বহু আগে প্রচলিত শকাব্দ, লক্ষনাব্দ, পালাব্দ, চৈতন্যাব্দ এর প্রচলিত প্রমাণ পাওয়া গেলেও বঙ্গাব্দ নিয়ে কোনো প্রচলন বা প্রমাণ পাওয়া যায় না।
সেই ৮৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দ এর সময়ে প্রচলিত শকাব্দ আকবরের শাসনামল পর্যন্ত সাধারণ মানুষের নিকট কিছুটা হলেও সমাদৃত ছিলো। কিন্তু শশাঙ্কের বঙ্গাব্দ এত দ্রুত হারিয়ে গেল! তাই আসলেই যদি শশাঙ্ক বঙ্গাব্দের প্রচলন করতেন তাহলে সেটার কিছুমাত্র লক্ষণ ও পরবর্তীকালে পাওয়া যেত। কারন বাংলার এত বড় একটা বিষয় এত দ্রুত হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে সেটা অবিশ্বাস্য। যেখানে অন্যান্য অব্দ গুলো কিছুটা হলেও টিকে আছে।
পশ্চিমবঙ্গে আরএসএসের তাত্ত্বিক নেতা ও পরিচিত মুখ জিষ্ণু বসু একটি যুক্তি দিয়েছেন।
“আকবরের জীবদ্দশায় তিনি বাংলার ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ কখনোই পাননি, ১৫৭৬-য়ে রাজমহলের যুদ্ধ জিতে মুঘলরা প্রথম বাংলা দখল করলেও তারপরও বহু বছর ধরে যুদ্ধ চলেছিল। আর বেছে বেছে সেই অস্থির বাংলাতেই আকবর একটা নতুন সাল চালু করবেন, সেটা খুব অস্বাভাবিক।”
জিষ্ণু বসু, পশ্চিমবঙ্গে আরএসএসের তাত্ত্বিক নেতা
কিন্তু জিষ্ণু বসু সম্ভবত আর একটি অস্বাভাবিক জিনিস এড়িয়ে গেছেন সেটা হল শশাঙ্ক এর সময়ে তো বাংলা ভাষা টাই চালু ছিলো না!
এ বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক ইসলামের বিশেষজ্ঞ কিংশুক চ্যাটার্জি একটি চমৎকার মন্তব্য করেছেন।
“শশাঙ্কর আমলে তো বাংলা ভাষাটাই চালু হয়নি। কাজেই তিনি বাংলার জন্য আলাদা অব্দ বা সাল চালু করেছিলেন এটা ভাবাটা বেশ বাড়াবাড়ি।”
কিংশুক চ্যাটার্জি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক ইসলামের বিশেষজ্ঞ
বরং ফসল তোলার ভিত্তিতে সাল গোনার যে রেওয়াজ, একে ‘ফসলি’ বলা হতো, এটা বহু আগে থেকেই ভারতের প্রায় সর্বত্রই চালু ছিল, বাংলাও এর ব্যতিক্রম নয়। শকাব্দ, লক্ষনাব্দ, পালাব্দ, চৈতন্যাব্দ ইত্যাদি নামে এ সনের প্রচলন ছিলো। যা পরে তারিখ ই ইলাহীর প্রচলন শুরু হলে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যায় । এবং এক সময় তারিখ ই ইলাহী ও বিলুপ্ত হয়ে যায়। টিকে থাকে বঙ্গাব্দ। আর নিভু নিভু প্রদীপের সলতে হিসেবে শকাব্দ।
যেমন শ্রীকৃষ্ণবিজয় কাব্যের রচনাকার মালাধর বসু লিখছেন,
“তেরোশো পঁচানব্বই শকে হইল গ্রন্থ আরম্ভন, চতুর্দশ দুই শকে হইল সমাপন।”
মালাধর বসু, শ্রীকৃষ্ণবিজয় কাব্যের রচনাকার
এখানে শক মানে শকাব্দকে বোঝানো হয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো শশাঙ্কই যদি বঙ্গাব্দ প্রবর্তন করে তাহলে তার যেসব ফলক বা শিলালিপি পাওয়া যায়, সেখানে বঙ্গাব্দের উল্লেখ নেই কেন?
এ প্রশ্নটি তুলেছেন ভাষা ও চেতনা সমিতির প্রধান ইমানুল হক।
যারা শশাঙ্ককে বঙ্গাব্দের প্রবর্তক বলেন তারা আকবরের সপক্ষের রেফারেন্সকে বলেন ঐতিহাসিকভাবে অসত্য! কিন্তু তারা শশাঙ্ক সম্পর্কে ঐতিহাসিকভাবে সত্য কোনো প্রমান আজও হাজির করতে পারেন নি। তারা যেসব প্রমাণ হাজির করেন সেসব মূলত লোককথা কিংবা কোনো পরগাছা ভিত্তিক প্রমান।
এমন একটা প্রমান হল অনেকে বলেন,
“মুর্শিদাবাদ অঞ্চলে শৈব শাসক শশাঙ্কর আমল থেকে আজ পর্যন্ত একটি ধর্মীয় উৎসব (শিব-চন্ডীর মেলা) আজও চলে আসছে। শশাঙ্ক প্রবর্তিত একটি শৈব-তান্ত্রিক উৎসব যদি বাংলার বুকে একটানা চোদ্দোশো বছর ধরে চলতে পারে, তাহলে তার প্রবর্তিত অব্দ কি পারে না?”
শশাঙ্ক সম্পর্কে প্রচলিত লোককথা
এ ব্যাপারে বিবিসি বাংলা তাদের বিশ্লেষনে অবশ্য বলেছে ,
“রাজা শশাঙ্কর সমর্থনে এই ধরনের নানা যুক্তিকে আশ্রয় করেই সঙ্ঘ পরিবার এখন তাকে বঙ্গাব্দর প্রবর্তক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে – যে উদ্যোগের অবশ্যই একটি রাজনৈতিক মাত্রাও আছে।”
বিবিসি বাংলার বিশ্লেষণ
লক্ষ্য কি শশাঙ্ক নাকি রাজনীতি?
আসলেই এখানে মূল লক্ষ্য হল রাজনীতি। রাজা শশাঙ্ক এর ঘাড়ে চড়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটাই হচ্ছে মূল লক্ষ্য। কিন্তু এটা করে যে মূলত একটা অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হচ্ছে সেটা বেমালুম ভুলে যাচ্ছে বিতর্ক সৃষ্টিকারীরা। তাদের এই ভূল এবং উদ্দ্যেশ্যপ্রনোদিত তথ্যের কারনে অস্থিরতা আর মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে জনগনের মাঝে।
বঙ্গাব্দ হিসাবের সহজ পদ্ধতি
ধরা যাক X নির্নেয় বাংলা সন;
Y প্রদত্ত খ্রীষ্টীয় সন
তাহলে আমরা লিখতে পারি
X=৯৬৩+ (Y- ১৫৫৬)
ধরা যাক Y= ২০২৩ সন।
X= ৯৬৩+(২০২৩-১৫৫৬)
= ৯৬৩+৪৬৭
= ১৪৩০ বাংলা সন
এতক্ষন যেটা বললাম সেটা পুরোটাই বিভিন্ন রেফারেন্স থেকে নিয়ে লেখা। এবার এগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে আমার কিছু ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ বা মত রয়েছে।
আমার ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ
বঙ্গাব্দর প্রবর্তক বা বাস্তবায়ক হিসেবে শশাঙ্কর নাম পুরোই অগ্রহণযোগ্য। তাকে টানাটা পুরোই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বঙ্গাব্দর বাস্তবায়ক হিসেবে আকবর এর ভিত্তিটাই বরং সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য। আর ঐতিহাসিক বিবেচনায় সবচেয়ে প্রামাণ্য ভিত্তি যার পক্ষে হবে তার দাবিটিই আগে আসবে এটাই স্বাভাবিক। আর এ দৃষ্টিকোনে আকবরই একমাত্র দাবিদার বঙ্গাব্দর বাস্তবায়ক হিসেবে। কারন তাঁর প্রচলিত তারিখ ই ইলাহী থেকেই আজকের এই বঙ্গাব্দ
তবে অনেকে এটা নিয়ে প্রশ্ন করেন যে , “বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ – সবগুলোই হিন্দু নক্ষত্র ও রাশিচক্র অনুযায়ী হয়েছে। একজন মুসলমান শাসক কেন এধরনের মাসের নাম দেবেন?”
তখন তার একটাই উত্তর মোঘলরা এদেশ লুট করতে আসেননি। তারা এদেশকে সব দিয়ে গিয়েছেন কানাকড়ি ও নিয়ে যান নি। তারা মিশে গিয়েছিলেন ভারতবর্ষের সাথে। তারা অযাচিত হস্তক্ষেপ করেননি কোনো ক্ষেত্রে।
আর সবচেয়ে বড় কথা আকবর যে একনিষ্ঠ মুসলমান সেটা মনে করার কোনো কারন নেই। তার প্রবর্তিত নূতন ধর্ম দীন-ই-ইলাহীর কথা ভুলে গেলে চলবে না। মুসলমান হিসেবে আকবরকে সিম্প্যাথি দেখাবার কোনো কারন নেই। তার অনৈসলামিক কার্যকলাপ ও বিভিন্ন ইসলামিক ব্যক্তিবর্গের প্রতি বিরাগভাজন মনোভাব তাকে অনেক আগেই বিতর্কিত করেছে।
মুজাদ্দিদে আলফে সানী আর আকবরের কাহিনী অনেকেরই জানা।
মুজাদ্দিদে আলফে সানী আর আকবর পরবর্তী সম্রাট জাহাঙ্গীর না থাকলে উপমহাদেশে আমরা আরো অনেক রংতামাশাই দেখতাম। যাই হোক সেসব অন্য আলোচনা।
আজ মূল বিষয় ই ছিলো বঙ্গাব্দ বিতর্ক। এখানে শেষাংশে আমার মতামত টুকু ছাড়া পুরোটাই শতভাগ তথ্যসূত্র নির্ভর। কারন সাম্প্রতিক কালে বঙ্গাব্দ নিয়ে যেসব বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তাতে সবার উচিত সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা।
বঙ্গাব্দর বাস্তবায়ন ও সম্রাট আকবর অবিচ্ছেদ্য অংশ ও ঐতিহাসিক বাস্তবতা। এখানে লোককথা কিংবা আনুমানিক হিসাবের কোনো সু্যোগ নেই। বাংলার ইতিহাস অনেক সমৃদ্ধ ইতিহাস এখানে ভালো খারাপ শাসন সবসময় হয়েছে। পরশ্রীকাতর না হয়ে সঠিক শাসনের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা একজন বাঙালি হিসেবে আমাদের কর্তব্য।
সব বিভ্রান্তির অবসান হোক ইতিহাস ফিরুক আবার স্বরুপে মহান আল্লাহর কাছে এটাই কামনা। নতুন বছরে তিনি যেন এদেশে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দেন।
শুভ নববর্ষ।
তথ্যসূত্রঃ
বাংলা সনের প্রবর্তক আকবর নাকি শশাঙ্ক - এ নিয়ে কলকাতায় নতুন বিতর্ক বঙ্গাব্দ: বাংলা সনের প্রবর্তক মুঘল সম্রাট আকবর, না কি গৌড়ের রাজা শশাঙ্ক? বঙ্গাব্দ: গৌড়ের রাজা শশাঙ্ক নন, মুঘল সম্রাট আকবরই বাংলা সনের প্রবর্তক, বলছেন বাংলাদেশের গবেষকরা শকাব্দ বাংলা সন যেভাবে এলো দীন-ই-ইলাহী কি মুজাদ্দিদে আলফে সানী Bongabder Utsokotha (বঙ্গাব্দের উত্স কথা) PDF বঙ্গাব্দের উৎসের সন্ধানে শশাঙ্ক থেকে আকবর শকাব্দ থেকে বঙ্গাব্দের জন্মকথা তারিখ-ই-ইলাহী বা বাংলা সন তারিখ-ই-ইলাহী এবং আজকের বঙ্গাব্দ | রাজিউল হাসান শশাঙ্ক-বাংলাপিডিয়া
আরো পড়ুন একজন তারা তিনজন
– আইটেক বাংলার ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করতেঃ এখানে ক্লিক করুন।
– আইটেক বাংলার ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকতে এই পেজ ভিজিট করুন।
– আইটেক বাংলার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
– গুগল নিউজে আইটেক বাংলার সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন
– আইটেক বাংলার সাইটে লিখতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
– প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে নিয়মিত ভিজিট করুন www.itechbangla.com সাইট।